বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের গানের বিকৃতি করায় সপ্তাহ খানেক ধরেই খবরের শিরোনামে রয়েছেন গায়ক এ আর রহমান। গানের সুর পরিবর্তন করায় সমালোচনা হচ্ছে তাকে নিয়ে। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সিনেমাটির নির্মাতারা ক্ষমা চাইলেও সেটা প্রত্যাখ্যান করেন কবি নজরুলের পরিবার।
এবার খোদ পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেই কবি নজরুলের পুরস্কার বিক্রি চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। সুর বিকৃতি নিয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন নাতি কাজী অরিন্দম এবং নাতনি খিলখিল কাজী। সেখানেই উঠে আসে পুরস্কার বিক্রির অভিযোগ।
সুর বিকৃত করার অভিযোগের জবাবে সিনেমার নির্মাতারা জানান, তারা চুক্তি অনুযায়ী কাজ করেছেন। এখানেই প্রশ্ন উঠেছে স্বত্ব বিক্রি নিয়ে। আর স্বত্ব হস্তান্তর নিয়ে কবির পরিবারই আপাতত দুই শিবিরে বিভক্ত।
তবে স্বত্ব বিক্রির বিষয়টি অস্বীকার করে অরিন্দম এবং খিলখিল কাজী দাবি করেন, তাদের না জানিয়েই কবির গানের স্বত্ব বিক্রি করেছিলেন দাদা অনির্বাণ কাজী। যিনি বর্তমানে রয়েছেন আমেরিকায়।
জানা গেছে, খিলখিল বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় যান। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে খিলখিল-অরিন্দমের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন অরিন্দমের স্ত্রী সুপর্ণা ভৌমিক এবং তাদের দুই সন্তান অনুরাগ ও অভীপ্সা। রীতিমতো বড় দাদা অনির্বাণের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছেন অরিন্দম।
অন্যদিকে, এ আর রহমান এবং রায় কাপুর ফিল্মসের তরফ থেকে জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান খিলখিল। পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কলকাতায় কেন নজরুলবিষয়ক কোনো প্রতিষ্ঠান নেই?
দাদা অনির্বাণের বিরুদ্ধে একাধিক ক্ষোভ প্রকাশ করে অরিন্দম জানান, গত ১০ নভেম্বরের পর থেকে অনির্বাণের সঙ্গে তার তরফ থেকে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো জবাব দেননি অনির্বাণ।
অরিন্দম আরও বলেন, আমার মা কল্যাণী কাজীর ৮৬ বছর বয়স ছিল। দাদাকেই বৈষয়িক দায়িত্ব দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু দাদা যে এমন ঘটাবে সেটা হয়তো মা-ও আশা করেননি।
আমি যতটুকু শুনেছি, দাদুর (কাজী নজরুল ইসলাম) পাওয়া সরকারি পুরস্কারও নাকি বিক্রি করতে গিয়েছিলেন আমার দাদা। শুধু তাই নয়, তিনিই নাকি নজরুলের একমাত্র উত্তরসূরি। আমরা কি তা হলে আত্মা?
সেইসঙ্গে রাজ্য সরকারের কাছে অরিন্দম অনুরোধ করেন, অবিলম্বে যেন নজরুলের একটি সংগ্রহশালা তৈরি করা হয়। পাশাপাশি শিগগিরই দাদা অনির্বাণ এবং রায় কাপুর ফিল্মসের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তারা।
সূত্র : আনন্দবাজার